ভাইরাল হওয়া সেই আত্মহত্যা করা বাবা | ভিডিও টা হয়ত অনেকেই দেখেছেন

 একটি বাবার নিঃশেষ হওয়ার গল্প...

একটি বাবার নিঃশেষ হওয়ার গল্প

ঘটনাটি রাজশাহীর বাঘার আড়ানী স্টেশনে।

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এক বৃদ্ধ মানুষ, যার জীবনসঙ্গিনী ৮ মাস আগেই দুনিয়ার মায়া কাটিয়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন।

তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, বাকি জীবনটা দুই ছেলে ও দুই মেয়ের ভালোবাসা, যত্ন ও পাশে থাকার মাঝেই কেটে যাবে।

কিন্তু বাস্তব বড় নির্মম।

কিছুদিন রাখার পর কেউই আর এই বাবাকে রাখতে চায়নি।

এক রাতে দরজার বাইরে কাঁপতে কাঁপতে কাটিয়েছেন তিনি—সেই রাত তার ছেলেরা ঘরের দরজা খুলেনি।

সকাল হতেই ঝগড়া বাঁধে দুই পুত্রবধূর সাথে। অবশেষে সেই বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়, জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় উঠানে।

তিনি চলে যান আড়ানী রেলস্টেশনে।

ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত একফোঁটা পানিও খাননি তিনি।

অবশেষে, সমাজের অবহেলা আর আপনজনের গালি-গালাজের ভার আর সহ্য হয়নি...

তিনি বেছে নেন আত্মহত্যার পথ।

আচ্ছা, এই পৃথিবী এতো নিষ্ঠুর কেন?

কেউ বাবা হারিয়ে পাগল প্রায়, কেউবা সেই বাবাকে জীবিত অবস্থায় তুচ্ছ করে ফেলে দেয়!

যে বাবা একসময় নিজের মুখের খাবার তুলে দিত সন্তানদের মুখে, তারই ভাগ্যে আজ না খেয়ে রেলস্টেশনে জীবন বিসর্জন লেখা থাকে!

কতটা কষ্ট, কতটা অপমান, কতটা অবহেলা হলে একজন মানুষ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়?

এই সমাজে আজ সন্তান আছে, ভালোবাসা নেই। ধর্ম আছে, নৈতিকতা নেই।

এই সমাজে আজ সন্তানদের উচ্চশিক্ষা আছে, কিন্তু নেই "ইনসানিয়াত"।

এই জন্যই সন্তানদের শুধু দুনিয়ার শিক্ষা নয়, ইসলামের শিক্ষা—আখলাক, শ্রদ্ধা, দায়িত্ববোধ শেখানো জরুরি।

পিতামাতার দোয়া একজন মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে পারে।

আর পিতামাতার অভিশাপ? সেটাও বদলে দিতে পারে গোটা জীবন।

আজ যে বৃদ্ধ স্টেশনে প্রাণ দিল, কাল সে হয়তো আমরা হতেই কেউ হতে পারি।

হে আল্লাহ, এমন কুলাঙ্গার সন্তান যেন আর কারো ঘরে জন্ম না নেয়।

লেখা: [মতিউর রহমান লিটন]

সূত্র: বাস্তব ঘটনা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্লেষণ